২৬ জুন ২০২৫

অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ‘পাওয়ার হিটার’ কে এই জিসান আলম?

কিশোর ডাইজেস্ট ডেস্ক
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৩০
জিসান আলমের রক্তেই ক্রিকেট। ছবি: সংগৃহীত

কয়েকদিন আগে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সুপার সিক্সে নেপালকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম কারিগর ‘পাওয়ার হিটার’ জিসান আলম। মারকুটে ব্যাটার। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের স্টাইলিশ ওপেনার। ক্রিকেটের খোঁজখবর যারা রাখেন, তারা জানেন যে জিসানকে অনেকেই বলেন ‘বাংলাদেশের রোহিত শর্মা’। রোহিতের মতোই প্রায় অবিকল জোরে ব্যাট চালাতে পারেন, দ্রুত রান তুলতে পারেন। আকার-গড়ন ও ব্যাটিং স্টাইলেও তিনি যেন অন্য এক রোহিত শর্মা। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের গুরুত্বপূর্ণ  ক্রিকেটার কে এই জিসান আলম?

জিসান আলমের রক্তেই ক্রিকেট। বাবা-চাচাদের ক্রিকেট খেলা দেখে বড় হয়েছেন। ক্রিকেটার হয়েছেন। বাবা জাহাঙ্গীর আলম ও চাচা জুয়েল হোসেন মনা দুজনই বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠ মাতিয়েছিলেন। আরেক চাচা সোহেল হোসেন পাপ্পু জাতীয় দলে সুযোগ না পেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। এমন পরিবারের সন্তানের ক্রিকেটার না হয়ে উপায় আছে! বাবা-চাচাদের দেখেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বুনে নেন হৃদয়ে। তাই তো একদম ছোট্টবেলায় নারায়ণঞ্জ ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়ে যায় এই ওপেনারের। স্বপ্ন দেখেন, একদিন বাবার মতো জাতীয় দলে খেলবেন। বাবার মতো ওপেনিংয়ে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করবেন।

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দলের সঙ্গে জিশান আলম (সবার সামনে)। ছবি: ফেসবুক

অনেকেই বলেন, ভুল সময়ে জন্মেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। বলার কারণও আছে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে তার যা কীর্তি সেইসব যে রেকর্ডে নেই। ১৯৮৯ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ দলের ইংল্যান্ড সফরের এক ম্যাচে ১৩২ রান করে নজরে আসেন তিনি। জাভেদ ওমরের সঙ্গে এক ম্যাচে ২১৯ রানের ওপেনিং জুটিও আছে। ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে দলের সেরা পারফর্মার। চ্যাম্পিয়ন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলেন অপরাজিত ১১৭ রানের ইনিংস। পরবর্তীতে খালেদ মাসুদ পাইলটের কাছে জাতীয় দলের জায়গা হারিয়েছিলেন। ঢাকা লিগে তিনবারের সর্বোচ্চ স্কোরার জাহাঙ্গীর। মোহামেডান, বিমানে, আবাহনীর মতো দলে খেলেছেন। সেই তারই সন্তান জিসান বাংলাদেশ যুব বিশ্বকাপ দলের অন্যতম ক্রিকেটার।

বাবা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে জিসানের মিল খোঁজা যায়। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে একাধিক রেকর্ডের মালিক জাহাঙ্গীর। বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে থাকলেও শেষ মুহূর্তে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে দলভুক্ত করতে নির্বাচকদের কাঁচিতে কাটা পড়ে তাঁর নাম। জিসান ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলে ভালোভাবেই ছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে মূল দলে জায়গা হয়নি তাঁর। এবার সুযোগ পেয়েছেন, সেটা তিনি কাজেও লাগিয়েছেন।

অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অন্যান্য খলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তার সঙ্গে জিশান আলম । ছবি: ফেসবুক

ভবিষ্যতে জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পূরণ করতে চান বাবার থমকে যাওয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আক্ষেপ। জিসান বলেন, ‘বাবার যে আক্ষেপ, সেটা আমি ঘোচানোর চেষ্টা করব। সর্বাত্মক চেষ্টা করব, বাবার যেটা হয়নি, সেটা পূরণ করতে পারি।’ সে পথ মাড়ানো যে সহজ নয় সেটি জানা জিসানের, ‘জাতীয় দলে খেলা অনেকটা ভাগ্যেরও ব্যাপার। তবে এখন ওসব নিয়ে ভাবছি না। এখন লক্ষ্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো কিছু করব। দেশের জন্য কিছু করব।’

জিসান অবশ্য এরই মধ্যে একটি স্বপ্ন পূরণ করে ফেলেছেন। এবার প্রথমবারের মতো যুব এশিয়া কাপজয়ী দলের একজন তিনি। তবে দলের চাহিদা মেটাতে পারেননি তিনি। ৪ ম্যাচে ৭১ রান যে নিজের সামর্থ্যের পুরোটা নয়, সেটি জানেন জিসান। মেরে খেলতে পছন্দ করা এই ওপেনার বলেন, ‘আশা করি সেমিফাইনাল খেলব, এরপর ফাইনাল এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেষ্টা করব।’

সর্বাধিক পঠিত