
রাতের ঘুম ঠিকঠাক না হলে সারা দিনটাই যেন মাটি হয়ে যায়। কাজ করতে বসে কিছুক্ষণ পরপর হাই ওঠে। মাথা ঝিমঝিম করে। কাজেও মন বসে না সহজে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীর সুস্থ সতেজ রাখতে দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক। কিন্তু আমাদের অনেকেরই তা হয়ে ওঠে না। কারণ একাধিক। হতে পারে কর্মক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত জীবনে অত্যধিক মানসিক চাপ, কিংবা শারীরিক অসুস্থতা। হতে পারে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও। কিন্তু আগামী দিনে সুস্থতার কথা ভেবে একটা সঠিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলাই যায়। মেনে চলতে পারেন এই সহজ ছয় উপায়—
নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান
নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমের অভ্যাস ওষুধের মতোই কাজ করতে পারে। প্রতিদিন রাত ১১টার মধ্যে আলো নিভিয়ে ঘুমোতে যান। সকাল ৭টায় অ্যালার্ম দিয়ে উঠে পড়ুন। অথবা সকালে আপনার কাজের সময় অনুযায়ী রাতের ঘুমের সময় নির্ধারণ করুন।
ঘুমের পরিবেশ
বেডরুম যেন আলুথালু না থাকে। পরিষ্কার চাদর, বালিশে ঘুমানোর আয়োজন করুন। ঘর একেবারে অন্ধকার বা হালকা আলো-আঁধারি থাকুক। কোনও রকম আওয়াজ বা অস্বস্তি যেন বেডরুমে না ঢোকে। ঘুম আসার ক্ষেত্রে ঘরের পরিবেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বেডরুম পছন্দের না হলে ঘুম সহজে আসে না।
রাতে চা-কফি নয়
চা, কফি কিংবা এনার্জি ড্রিংক অনেক সময় বেশি খাওয়া হয়ে যায়। তবে এই ধরনের পানীয় ভীষণভাবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। সন্ধ্যার পর এগুলো না খেয়ে বরং হারবাল টি অথবা এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। যা আপনার শরীর থেকে উত্তেজনা কমিয়ে শান্তিতে চোখের পাতা এক করতে দেবে। ঘুমও হবে আরামদায়ক।
গ্যাজেটস দূরে রাখুন
ফোন, ল্যাপটপ নিয়ে আগের মুহূর্ত অবধি নাড়াচাড়া করে গেলে একেবারেই ঘুম আসবে না। ঘুমোনোর তোরজোড় করার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সমস্ত রকম গ্যাজেট দূরে সরিয়ে ফেলুন। এগুলো থেকে বের হওয়া রেডিয়েশন এবং স্ক্রিনলাইট ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন।
নিয়মিত শরীরচর্চা
আমাদের শরীরে অনেক বাড়তি শক্তি জমে থাকে। সারা দিন উপযুক্ত পরিশ্রম না হলে সেই শক্তি ক্ষয় হয় না, শরীর ক্লান্ত হয় না। কিন্তু ঘুমানোর জন্য একটু ক্লান্তি জরুরি। দিনে যদি অন্তত আধাঘণ্টা হাঁটেন এবং আধাঘণ্টা ব্যায়াম, প্রাণায়াম বা যোগাসন করেন, তাহলে কিন্তু রাতে ভালো ঘুম হবে। সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি।
ভালো কিছু করুন
এগুলো চেষ্টা করার পরও যদি আপনার ঘুম না আসে, তবে জোর করে শুয়ে থেকে এপাশ-ওপাশ করার দরকার নেই। উঠে এমন কিছু করুন যা আপনাকে শান্তি দেয়, আনন্দে রাখে। হয়তো দু-পাতা বই পড়লেন, একটু গান শুনলেন। কিন্তু বিছানায় শুয়ে থেকে ঘুম আসছে না কেন, সেটা ভেবে যেন ভোর না করে ফেলেন।