
কোনও জিনিস ভেঙে গেলে প্রথমেই আমরা যে জিনিসটির কথা ভেবে থাকি, তা হলো সুপার গ্লু। ভাঙা কাচ, প্লাস্টিক, কাঠ—সব জোড়া লাগাতে সুপার গ্লু বেশ কার্যকর। এর উদ্ভাবক ড. হ্যারি কুভার।
মাত্র এক বর্গইঞ্চি জায়গায় সুপার গ্লুর হালকা প্রলেপ এক টনের বেশি ওজন ধরে রাখতে পারে। এই অসাধারণ শক্তির কারণ হলো এর মধ্যে ‘সায়ানোঅ্যাক্রিলেট’ নামের এক রাসায়নিক তরল।
সুপার গ্লুর প্রধান উপাদান সায়ানোঅ্যাক্রিলেট। এটি একটি অ্যাক্রিলিক রেজিন, যা খুব দ্রুত বন্ধন তৈরি করে। এটি কাজ করার জন্য পানিতে থাকা হাইড্রক্সিল আয়নের প্রয়োজন হয়। সব জিনিসের সঙ্গে কিছু না কিছু জলীয় অংশ থাকে। পানির সংস্পর্শে সায়ানোঅ্যাক্রিলেট আঠালো হয়ে যায়। এটি আর্দ্র স্থানেই সবচেয়ে ভালো কাজ করে। যদিও একদম ভেজা জায়গায় এটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সায়ানোঅ্যাক্রিলেট শুধু ভাঙা বা ছেঁড়া জিনিস জোড়া লাগাতেই কাজ করে না; এটি বিভিন্ন দেশে অপরাধ তদন্তকারীরা এটি আঙুলের ছাপ শনাক্তে ব্যবহার করে। সায়ানোঅ্যাক্রিলেটকে তাপ দিলে সৃষ্ট ধোঁয়া ঘনীভূত হয়ে মসৃণ পৃষ্ঠের ওপর একটি সাদা পলিমার স্তর তৈরি করে, ফলে আঙুলের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়। এটি কার্বন পাউডার ছড়িয়ে আঙুলের ছাপ শনাক্ত করার চেয়ে কার্যকর।
প্রশ্ন হলো, সুপার গ্লু যে টিউবে থাকে সেটির সঙ্গে জোড়া লেগে যায় না কেন? কারণ, টিউবের ভেতর বায়ু ও পানিশূন্য অবস্থায় একে ঢুকিয়ে ভালোভাবে মুখ আটকে দেওয়া হয়। পানির সংস্পর্শ না পেলে কোনও কিছু জোড়া লাগানো সম্ভব নয়। তাই পানি না পেয়ে সে টিউবের ভেতরের গায়ের সঙ্গে জোড়া লাগতে পারে না। বাইরে বেরিয়ে বাতাসের মধ্যে থাকা জলীয়বাষ্পের সঙ্গে মিশে সে তার কাজ শুরু করে দেয়।