১২ ডিসেম্বর ২০২৪

যেভাবে শিশুর জন্য ইউটিউব নিরাপদ রাখবেন

আবু দারদা মাহফুজ
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৯
ইউটিউবের রেস্ট্রিক্টেড মোড চালু রাখলে ফিডে শিশুর জন্য উপযোগী নয়—এমন কনটেন্ট সামনে চলে আসার আশঙ্কা কম। ছবি: সংগৃহীত

অনেক শিশুরই জাগ্রত সময়ের একটা বড় অংশ এখন ইউটিউব দেখে কাটে। নানা ধরনের কনটেন্টে ভরপুর এই প্ল্যাটফর্মে বেশ নতুন সংযোজন হলো ‘ইউটিউব শর্টস’। ইউটিউব শর্টস মূলত এক মিনিট বা এর চেয়ে কম ব্যাপ্তির ভিডিও কনটেন্টগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। সামগ্রিকভাবে ইউটিউব ও ইউটিউব শর্টসে প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে। ইউটিউব শিশুর জন্য নিরাপদ রাখতে কী করা যেতে পারে, চলুন জেনে নিই।  

১. নিয়মিত ‘ওয়াচ হিস্ট্রি’ দেখুন: শিশু ইউটিউব দেখা শেষ করার পর অভিভাবক হিসেবে আপনার উচিত ওয়াচ হিস্ট্রি খেয়াল রাখা। ইউটিউবে একটি অ্যাকাউন্ট দিয়ে কী কী ভিডিও দেখা হলো, তার একটি তালিকা ওয়াচ হিস্ট্রিতে সংরক্ষিত থাকে। সেখানে চোখ রাখলেই শিশু কী ধরনের কনটেন্ট দেখছে, তা সম্পর্কে ধারণা পাবেন।

২. ‘রেস্ট্রিক্টেড মোড’ চালু করা: ইউটিউবের রেস্ট্রিক্টেড মোড চালু রাখলে ফিডে শিশুর জন্য উপযোগী নয়—এমন কনটেন্ট সামনে চলে আসার আশঙ্কা কম। যদিও এটি শতভাগ কার্যকর নয়, তবে বেশির ভাগ পরিণত, অনুপযোগী কনটেন্ট ফিল্টার করে ফিড শিশুর জন্য উপযোগী করে রাখতে পারে। অ্যাকাউন্ট সেটিংস থেকে এ সুবিধা চালু করা যায় সহজেই।

৩. অনুপযোগী কনটেন্টে ‘নট ইন্টারেস্টেড’: যে ধরনের কনটেন্ট বা শর্টস আপনার শিশুকে দেখাতে চান না, সেগুলোকে ‘নট ইন্টারেস্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত করে রাখুন। এভাবে কয়েকটি অনুপযোগী ভিডিও চিহ্নিত করা গেলে ইউটিউবের অ্যালগরিদম বুঝে যাবে কোন ধরনের ভিডিও আপনি ফিডে দেখতে চান, আর কোনগুলো চান না। পরবর্তী সময়ে ইউটিউব ফিডে সে ধরনের কনটেন্ট আসা বন্ধ হবে।

৪. ‘ইউটিউব কিডস’ ব্যবহার: ইউটিউব কিডস মূলত শিশুদের উপযোগী কনটেন্টসমৃদ্ধ ইউটিউবেরই একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এটি কনটেন্টগুলোর উপযোগিতা বুঝে শিশুদের দেখার পরামর্শ দিয়ে থাকে। আবার বিশ্বব্যাপী শিশুরা যে কনটেন্টগুলো বেশি দেখে, সেগুলোকে সামনে এগিয়ে রাখে। ফলে বৈশ্বিকভাবে শিশুরা একই ধরনের কনটেন্ট দেখে, শেখে। শিশুদের ইংরেজি শেখানোর জন্যও অনেক অভিভাবক ইউটিউব কিডস ব্যবহার করেন।

৫. একসঙ্গে দেখা: শিশু ইউটিউবে যেসব কনটেন্ট দেখছে, আপনিও তা পাশে বসে দেখুন। এতে আপনার সঙ্গে শিশুর বন্ধন দৃঢ় হবে। সে কী দেখছে, তার ওপর নজরদারিও করতে পারবেন। শিশুর সঙ্গে তার উপযোগী কনটেন্ট নিয়ে আলাপ–আলোচনাও করতে পারবেন। এর ফলে আপনার ও আপনার শিশুর ভেতর ভালো বোঝাপড়া আর একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরিতেও সুবিধা হবে।  

৬. শিশুকে বুঝিয়ে বলুন: ইউটিউব শর্টস বা প্ল্যাটফর্মটির নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে তার সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করুন। ইউটিউবে সে কী ধরনের কনটেন্ট দেখে, তা নিয়ে আলোচনা করুন। বিশেষ কিছু কনটেন্ট কেন শিশুর জন্য অনুপযোগী, তাকে বুঝিয়ে বলুন।
 
৭. ‘ইউটিউব শর্টস’ বন্ধ রাখুন: সরাসরি ইউটিউব শর্টস বন্ধ রাখার কোনো উপায় নেই। তবে ইউটিউব অ্যাপের পুরোনো ভার্সনগুলোয় শর্টস দেখার সুবিধা নেই। সেই ভার্সনগুলো ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিতে পারেন। অ্যাপল স্টোর বা প্লে স্টোরে অবশ্য পুরোনো ভার্সনের অ্যাপ ডাউনলোডের সুযোগ নেই। ইন্টারনেটে একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। বলে রাখা ভালো, প্লে স্টোর বা অ্যাপল স্টোর বাদে যে সোর্স থেকেই অ্যাপ ডাউনলোড করুন না কেন, সাইবার নিরাপত্তায় ঝুঁকি থাকবেই।  

৮. অ্যাপ ব্লক করে দিন: ওপরের কোনো কিছুতেই যদি কাজ না হয়, আর ইউটিউব যদি শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন, তাহলে ডিভাইস থেকে অ্যাপটি ব্লক করে রাখতে পারেন।


সূত্র: কিড স্ক্রিন

সর্বাধিক পঠিত